ফোনে বিয়ে করা কি জায়েজ?

সংগৃহীত ছবি

 

ধর্ম ডেস্ক :রাসুলুল্লাহ (স.) ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনীতে ফোনে বা মোবাইলে বিয়ের কোনো উদাহরণ না থাকলেও বর্তমান যুগের প্রয়োজনীয়তার কারণে শর্তসাপেক্ষে এর অবকাশ রয়েছে। এক্ষেত্রে শরিয়ত সমর্থন করে—এমন পদ্ধতি গ্রহণ করা জরুরি। পাত্র-পাত্রী দূরদেশে থাকা অবস্থায় আকদ-নিকাহ করতে হলে নিম্নে বর্ণিত দুই পদ্ধতি হতে কোনো একটি অবলম্বন করবে।

 

১. পাত্র টেলিফোনে দেশে একজনকে তার পক্ষে উকিল (স্থলাভিষিক্ত) নির্ধারণ করবে। যখন বিয়ের মজলিসে দুই সাক্ষীর উপস্থিতিতে পাত্রীর পক্ষ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অভিভাবক বলবে আমি বিদেশে বসবাসকারী অমুকের কাছে এত টাকা মোহরে মেয়েকে বিয়ে দিলাম। তখন উকিল বলবে আমি পাত্রের পক্ষে কবুল করলাম। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৩১, আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৪, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১১/১৬১)

 

২. পাত্রীর পিতা বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অভিভাবক দেশ থেকে টেলিফোনে বিদেশে তার পক্ষে বিয়ে দেওয়ার জন্য একজন উকিল মনোনীত করবে এবং ওই উকিল সেখানে বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিতিতে বলবে, আমি অমুক মেয়েকে এই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিলাম। ছেলে তখনই বলবে কবুল করলাম। উক্ত পদ্ধতিদ্বয়ের কোনো একটি অবলম্বন করলে বিয়ে হয়ে যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৩১, আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৪, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১১/১৬১)

 

মূলত অডিও বা ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ইজাব-কবুল (প্রস্তাব-গ্রহণ) হওয়া এবং তা একই মজলিসে হওয়া জরুরি। টেলিফোন-মোবাইল যতই উন্নত হোক না কেন, তার দ্বারা মজলিসের শর্ত পূর্ণ হয় না বিধায় এতে আকদ সম্পাদন হবে না। তাই ওপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে মোবাইলে কোনো ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে এবং উকিল সাক্ষীর সামনে ইজাব কবুল সম্পন্ন করতে হবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৪, ফতোয়ায়ে উসমানি: ২/৩০৫)

 

ই-মেইল বা মেসেজে বিয়ে শুদ্ধ নয়। তবে, মেসেজ বা ই-মেইলের মাধ্যমে প্রেরিত বিয়ের প্রস্তাব প্রেরকের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলে দুজন পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুজন নারী সাক্ষীর সম্মুখে তা পাঠ করবে। এতে অপর পক্ষ তা মৌখিকভাবে কবুল করলে বিয়ে শুদ্ধ হবে। (খুলাসাতুল ফতোয়া: ২/৪৯, রদ্দুল মুহতার: ৩/১২)

 

প্রতিনিধি ছাড়া লাউড স্পিকারে অনেক সাক্ষীর সম্মুখে ইজাব-কবুল সম্পন্ন হলেও ওই বিয়ে সহিহ হবে না। বরং ফোনে বিয়ে সহিহ হওয়ার জন্য একই মজলিসে সাক্ষীদের সম্মুখে উভয় পক্ষ কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ইজাব-কবুল সম্পন্ন হওয়া জরুরি। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২৯৪, ১/৩৬৯; আদ্দুররুল মুখতার: ৩/৫১৬; তাতারখানিয়া: ৪/৩৬)  সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে মানুষ পছন্দের প্রার্থীকে বেছে নেবে: টুকু

» রাতারগুলের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকার পাশে থাকবে: আসিফ নজরুল

» প্রধান উপদেষ্টা জাতিসংঘে যাচ্ছেন ৪ রাজনীতিবিদকে নিয়ে

» এবারের দুর্গাপূজা উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» দুর্গাপূজায় আমাদের সর্বোচ্চ সতর্ক ও প্রতিরোধের প্রস্তুতি থাকতে হবে: তারেক রহমান

» পিআর দাবি জনগণের আঙ্খাকার সঙ্গে ‘মুনাফেকি’: রিজভী

» পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় অতন্দ্র প্রহরী হোন: নেতা-কর্মীদের মির্জা ফখরুল

» সফররত ইইউ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক

» মোরেলগঞ্জে লবণাক্ত জমিতে মিষ্টি শসার বাম্পার ফলন, ভালো দাম পেয়ে কৃষকের মুখে হাসি

» বড়াইগ্রামের বনপাড়া-পাবনা মহাসড়ক খানা-খন্দে এখন মৃত্যুফাঁদ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ফোনে বিয়ে করা কি জায়েজ?

সংগৃহীত ছবি

 

ধর্ম ডেস্ক :রাসুলুল্লাহ (স.) ও সাহাবায়ে কেরামের জীবনীতে ফোনে বা মোবাইলে বিয়ের কোনো উদাহরণ না থাকলেও বর্তমান যুগের প্রয়োজনীয়তার কারণে শর্তসাপেক্ষে এর অবকাশ রয়েছে। এক্ষেত্রে শরিয়ত সমর্থন করে—এমন পদ্ধতি গ্রহণ করা জরুরি। পাত্র-পাত্রী দূরদেশে থাকা অবস্থায় আকদ-নিকাহ করতে হলে নিম্নে বর্ণিত দুই পদ্ধতি হতে কোনো একটি অবলম্বন করবে।

 

১. পাত্র টেলিফোনে দেশে একজনকে তার পক্ষে উকিল (স্থলাভিষিক্ত) নির্ধারণ করবে। যখন বিয়ের মজলিসে দুই সাক্ষীর উপস্থিতিতে পাত্রীর পক্ষ থেকে ক্ষমতাপ্রাপ্ত অভিভাবক বলবে আমি বিদেশে বসবাসকারী অমুকের কাছে এত টাকা মোহরে মেয়েকে বিয়ে দিলাম। তখন উকিল বলবে আমি পাত্রের পক্ষে কবুল করলাম। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৩১, আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৪, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১১/১৬১)

 

২. পাত্রীর পিতা বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত অভিভাবক দেশ থেকে টেলিফোনে বিদেশে তার পক্ষে বিয়ে দেওয়ার জন্য একজন উকিল মনোনীত করবে এবং ওই উকিল সেখানে বিয়ের মজলিসে সাক্ষীর উপস্থিতিতে বলবে, আমি অমুক মেয়েকে এই ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিলাম। ছেলে তখনই বলবে কবুল করলাম। উক্ত পদ্ধতিদ্বয়ের কোনো একটি অবলম্বন করলে বিয়ে হয়ে যাবে। (বাদায়েউস সানায়ে: ২/২৩১, আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৪, ফতোয়ায়ে মাহমুদিয়া: ১১/১৬১)

 

মূলত অডিও বা ভিডিও কলের মাধ্যমে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য দুজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ইজাব-কবুল (প্রস্তাব-গ্রহণ) হওয়া এবং তা একই মজলিসে হওয়া জরুরি। টেলিফোন-মোবাইল যতই উন্নত হোক না কেন, তার দ্বারা মজলিসের শর্ত পূর্ণ হয় না বিধায় এতে আকদ সম্পাদন হবে না। তাই ওপরে বর্ণিত পদ্ধতিতে মোবাইলে কোনো ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে এবং উকিল সাক্ষীর সামনে ইজাব কবুল সম্পন্ন করতে হবে। (আদ্দুররুল মুখতার: ৩/১৪, ফতোয়ায়ে উসমানি: ২/৩০৫)

 

ই-মেইল বা মেসেজে বিয়ে শুদ্ধ নয়। তবে, মেসেজ বা ই-মেইলের মাধ্যমে প্রেরিত বিয়ের প্রস্তাব প্রেরকের ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলে দুজন পুরুষ বা একজন পুরুষ ও দুজন নারী সাক্ষীর সম্মুখে তা পাঠ করবে। এতে অপর পক্ষ তা মৌখিকভাবে কবুল করলে বিয়ে শুদ্ধ হবে। (খুলাসাতুল ফতোয়া: ২/৪৯, রদ্দুল মুহতার: ৩/১২)

 

প্রতিনিধি ছাড়া লাউড স্পিকারে অনেক সাক্ষীর সম্মুখে ইজাব-কবুল সম্পন্ন হলেও ওই বিয়ে সহিহ হবে না। বরং ফোনে বিয়ে সহিহ হওয়ার জন্য একই মজলিসে সাক্ষীদের সম্মুখে উভয় পক্ষ কিংবা তাদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ইজাব-কবুল সম্পন্ন হওয়া জরুরি। (ফতোয়ায়ে হিন্দিয়া: ১/২৯৪, ১/৩৬৯; আদ্দুররুল মুখতার: ৩/৫১৬; তাতারখানিয়া: ৪/৩৬)  সূএ:ঢাকা মেইল ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com